দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ফেরার পর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বন্ধে সক্রিয় হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতোমধ্যে মার্কিন ও রুশ কূটনীতিকদের মধ্যে রিয়াদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের বাদ দিয়ে এই আলোচনায় বসায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, "ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও কিয়ার স্টারমার ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি।" যদিও তিনি তাদের ব্যক্তিগতভাবে ভালো মানুষ ও বন্ধু বলে উল্লেখ করেন।
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করার পর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে ট্রাম্পের দাবি, কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধ থামানোর উদ্যোগ নিতে ইউরোপ আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারত।
রিয়াদে হওয়া বৈঠকে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের আমন্ত্রণ না জানানোয় কিয়েভে অসন্তোষ দেখা গেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় প্যারিসে জরুরি বৈঠকে মিলিত হন ইউরোপীয় নেতারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, "শান্তি চুক্তি প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। যুদ্ধ বন্ধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।" তবে ট্রাম্পের মতে, শান্তি আসবে কেবল পুতিন ও জেলেনস্কির সরাসরি আলোচনায়।
ওভাল অফিসে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, "ইউক্রেনের ওপর যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা ফেরত পেতে দেশটির খনিজ সম্পদের চুক্তি হওয়া জরুরি।" জেলেনস্কির প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিয়েভ বিনিয়োগের জন্য খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত করতে রাজি, তবে বিনিময়ে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধা চায়।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ স্পষ্ট করেছেন, জার্মানি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের পক্ষে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, "জার্মানি ও ইউরোপ তাদের অবস্থানে অবিচল থাকবে।"
ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুদ্ধ থামানোর প্রচেষ্টা কতদূর সফল হবে, তা সময়ই বলবে। তবে রিয়াদ বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।